দপ্তরে বসে সভা করেও সম্মানি পান যশোর শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা
১৭ মে ২০২৪, ১০:৪৮ এএম

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বয়স সংশোধনী কমিটির একটি সভা হয় গত বছরের ১৫ অক্টোবর। কমিটির সভাপতি হিসেবে সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আহসান হাবীব। ১৪ সদস্যের কমিটির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আট সদস্য। এর মধ্যে বোর্ডের অভ্যন্তরীণ সদস্য ছিলেন পাঁচজন ও বহিঃস্থ সদস্য ছিলেন তিনজন। উপস্থিত সবাই চার হাজার টাকা করে সম্মানি পান।
এভাবে ‘সিটিং অ্যালাউন্স’ বাবদ প্রতি মাসে বোর্ডের কর্মকর্তারা কয়েক লাখ টাকা করে তুলে নিচ্ছেন। গত বছরের শেষ তিন মাসে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) বোর্ডের ১৬ কর্মকর্তা ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা সম্মানি পেয়েছেন বলে বোর্ডের নথি থেকে জানা গেছে। কার্যদিবসে কার্যালয় বসে বৈঠক করে ‘সম্মানি’ নেওয়াকে ‘অনৈতিক’ বিবেচনা করে তা বন্ধ রেখেছিলেন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান। তবে কর্মকর্তাদের দাবির মুখে বর্তমান চেয়ারম্যান তা আবারও চালু করেছেন।
এ বিষয়ে যশোর শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মোল্লা আমির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে, অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তাদের সিটিং অ্যালাউন্স নেওয়াটা অনৈতিক। কারণ, সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে ২৪ ঘণ্টাই আমার অফিশিয়াল ডিউটি। বোর্ডের প্রয়োজনে মিটিং–সিটিং করা লাগতেই পারে। নিজের চেয়ারে বসে অফিশিয়াল টাইমে মিটিং করে টাকা নেওয়াটা যৌক্তিক মনে হয়নি। এ কারণে আমি, এটা বাতিল করেছিলাম।’
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বয়স সংশোধন, দরপত্র, পরীক্ষা, আপিল অ্যান্ড আর্বিট্রেশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে বোর্ডের ১৮টি কমিটি রয়েছে। বোর্ডের চেয়ারম্যান, সচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ কয়েক কর্মকর্তা অধিকাংশ কমিটির সদস্য। এসব কমিটির সদস্যরা বৈঠক করে সম্মানি নিচ্ছেন।
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের শেষ তিন মাসে চেয়ারম্যান আহসান হাবীব ৬০ হাজার ৫০০ টাকা, সচিব এম আবদুর রহিম ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বিশ্বাস শাহীন আহম্মদ ৬৮ হাজার টাকা, কলেজ পরিদর্শক সমীর কুমার কুণ্ডু ৮২ হাজার টাকা, বিদ্যালয় পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম ৬২ হাজার টাকা, উপপরিচালক এস এম রফিকুর রহমান ৪৬ হাজার টাকা, প্রোগ্রামার জাকির হোসেন ৪০ হাজার টাকা, উপকলেজ পরিদর্শক মোদন মোহন দাস ৩০ হাজার টাকা বৈঠক সম্মানি পেয়েছেন। রেজিস্টার খাতায় স্বাক্ষর করে তাঁরা এই টাকা তুলে নেন। কমিটির বহিঃস্থ সদস্যরাও একইভাবে বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য সম্মানি পেয়েছেন। চলতি বছরেও প্রতি মাসেই কর্মকর্তারা এ সম্মানি নিচ্ছেন।